Bangla24x7 Desk : জাতীয় রাজনীতিতে নক্ষত্রপতন ! বাহাত্তরে লড়াই থামল কমরেড সীতারাম ইয়েচুরির। পিটিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন দুপুরে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর ফুসফুসে সংক্রমণ ছিল। নিউমোনিয়া হয়েছিল সিপিআইএম নেতার। গত ১৯ অগস্ট তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। আইসিইউ-তে ভর্তি ছিলেন তিনি। গত ৫ সেপ্টেম্বর তাঁকে ভেন্টিলেটরে দিতে হয়েছিল। বুধবার রাতে এইমসের চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, সিপিআইএমের সাধারণ সম্পাদকের শারীরিক অবস্থা সংকটজনক হলেও স্থিতিশীল। বৃহস্পতিবার দুপুরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন তিনি। বাম নেতার প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমেছে দেশের রাজনৈতিক মহলে। বলা বাহুল্য, অল্প সময়ের মধ্যে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এবং ইয়েচুরির মৃত্যুতে বড়সড় শূন্যতা তৈরি হল ভারতের বাম রাজনৈতিক মহলে।
মঙ্গলবার সোশাল মিডিয়ায় সিপিআইএমের তরফে এক বিবৃতিতে দলের সাধারণ সম্পাদকের অবস্থা ‘সংকটজনক’ বলে জানানো হয়েছিল। ‘রেসপিরেটরি সাপোর্টে’ থাকার পরেও প্রয়াত হয়েছেন ইয়েচুরি। বাম নেতার প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, সীতারাম ইয়েচুরির মৃত্যু জাতীয় রাজনীতিতে বড় ক্ষতি। গত অগস্টে তাঁর চোখের ছানি অপারেশন হয়েছিল। সেই কারণে তিনি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর প্রয়াণের পরও কলকাতায় আসতে পারেননি। এইমসের আইসিইউতেই চলছিল চিকিৎসা। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের একটি দল তাঁর শারীরিক অবস্থার উপর নজর রাখছিলেন। সূত্রের খবর, শেষ মুহূর্তে একটি ইনজেকশন দিয়ে তাঁর প্রাণ রক্ষার চেষ্টা করা হয়েছিল।
১৯৫২ সালের ১২ আগস্ট মাদ্রাজে জন্ম সীতারাম ইয়েচুরির। বাবা সর্বেস্বরা সোম্যজুলা ইয়েচুরি ছিলেন অন্ধ্রপ্রদেশ স্টেট রোড ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশনের কর্মী। মা কল্পকাম ইয়েচুরি সরকারি চাকুরে। ১৯৫২ সালে তৎকালীন মাদ্রাজে (চেন্নাই)-র এক তেলেগু ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মেছিলেন সীতারাম ইয়েচুরি। দিল্লির সেন্ট স্টিফেন্স কলেজ থেকে অর্থনীতিতে বি. এ এবং জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন তিনি। ছাত্র জীবন থেকেই বাম রাজনীতি। তিনবার জেএনইউ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৭৫ জরুরি অবস্থার সময় জেনেইউয়ের ছাত্র থাকাকালীন গ্রেফতার হয়েছিলেন সীতারাম। ঐ বছরই তিনি ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হয়েছিলেন। ২০১৫ সালের ১৯ এপ্রিল সিপিএমের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন সীতারাম। গত ৯ বছর ধরে সেই দায়িত্বে ছিলেন তিনি। ২০০৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত তিনি রাজ্যসভার সদস্য ছিলেন। বৃহস্পতিবার ৭২ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন তিনি।