Diamond Harbour Fort : জরাজীর্ণ দেওয়াল , ধ্বংসস্তুপ ! কঙ্কালসার চেহারা বুঝিয়ে দেয় কেল্লার অস্তিত্বহীনতার কথা

Bangla24x7 Desk : Diamond Harbour Fort : জরাজীর্ণ দেওয়াল , ধ্বংসস্তুপ ! কঙ্কালসার চেহারা বুঝিয়ে দেয় কেল্লার অস্তিত্বহীনতার কথা। ডায়মন্ড হারবার। দক্ষিণ ২৪ পরগনার হুগলি নদীর তীরে ডায়মন্ড হারবার আধুনিক ভারতের ইতিহাসে এক বিশেষ প্রসিদ্ধ স্থান। অঞ্চলের পূর্বতন নাম ছিল হাজিপুর। অঞ্চলটি এক সময়ে বন্দর শহর হিসেবে পরিচিতি ছিল। তবে বর্তমানে ডায়মন্ড হারবার সুন্দরবনের প্রবেশদ্বার অর্থাৎ Gateway Of Sundarbane বলেই পরিচিত। উত্তর থেকে দক্ষিণে বয়ে যাওয়া হুগলী নদীর পাদদেশে ডায়মন্ড হারবার শহরের একেবারে দক্ষিণে ইংরেজ বণিকদের প্রায় ২০০ বছরের পুরোনো ফেলে যাওয়া চিংড়ি খাল ও পোর্ট আজও রয়ে গেছে সেই স্মৃতিকে আঁকড়ে ধরে।

অতীতের সেই কেল্লা বর্তমানে মৃত্যুমুখে। অতীতের বর্ণময় ইংরেজ স্মৃতি সময়ের হাত ধরে জীর্ণ, ধ্বংসস্তুপে পরিণত। বিদেশীদের তৈরি পোর্টের কাছাকাছি অঞ্চল একেবারেই নীরব। এক অদ্ভুদ রকমের নীরবতা যেন গ্রাস করেছে। গা ছমছম করা পরিবেশ – অবহেলায় পড়ে থাকা এই পোর্ট যেন অতীতের কথা মনে করাতে চায়। অতীতে কেল্লা জুড়ে গোড়া সৈন্যদের পাহাড়া থাকত । শাল , সেগুন দিয়ে তৈরি কেল্লার বিশালাকৃতি তোরণ , প্রত্যেক ঘরের দু’তিনটে করে দরজা , ঘরের উত্তর ও দক্ষিন প্রান্তে জানলা ছিল গোলাকৃতি – সেগুলো দিয়ে নদীবক্ষে চলাচল করা জাহাজগুলোর উপর নজরদারি চালানো হত। মাটির নিচের ঘরের মাঝ বরাবর ঘরের উপর বড়বড় দুটি কামান বসানো ছিল। যদিও আজ সবই ইতিহাস। সবকিছুই নদীগর্ভে বিলীন।

তবে কেল্লার নাম চিংড়িখালি পোর্ট কেন ? শোনা যায় , স্থানীয় হাঁড়া মুকুন্দপুর গ্রামে যাওয়ার রাস্তার পাশেই ছিল কাটা খাল , অতীতে এই এলাকায় নির্জন ও ঘন জঙ্গল থাকায় এই কাটা খাল ও নদী কিনারায় পাওয়া যেত প্রচুর চিংড়ি। সম্ভবত খালে প্রচুর চিংড়ি থাকায় ইংরেজরা এই পোর্টের নাম দেন চিংড়ি খাঁড়ি। পাশেই ছিল লাইট হাউস। বঙ্গোপসাগরে মোহনা থেকে কলকাতা পর্যন্ত ছোট ছোট গ্যাস পোস্ট করে নদী তীরবর্তী এলাকায় বসানো হয়। যা সমুদ্রে আগত জাহাজ গুলোকে সঙ্কেত প্রদান করার কাজ করত।

Diamond Harbour Fort : জরাজীর্ণ দেওয়াল , ধ্বংসস্তুপ ! চিংড়িখালির কঙ্কালসার চেহারা বুঝিয়ে দেয় কেল্লার অস্তিত্বহীনতার কথা

Read More : Lifestyle : কথায় কথায় চোখে জল আসে ? এটা কিন্তু আপনার দুর্বলতা নয় ! আপনি এই ‘বিশেষ’ গুণের অধিকারী

তবে সবাই নদীগর্ভে বিলীন। ভেঙে পড়েছে কেল্লার দেওয়াল , ভাঙনের মুখে নদীর বাঁধ সংলগ্ন রেলিং। কখনও কখনও তো জোয়ারের জল এতটাই বৃদ্ধি পায় যে নদী সীমানা ছড়িয়ে জল উঠে আসে কেল্লা সংলগ্ন ময়দানে। ভাদ্র মাসের কোটাল হলে তো আর কথাই নেই। বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে জনজীবন , লোকসানের মুখে পড়েন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। কি আর করা যাবে ? এভাবেই চলছে , আসলে ইতিহাস তো আর থেমে থাকে না , রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন না করলে সেটা তো অস্তিত্বহীনতার মুখে চলে যাবে সেটাই স্বাভাবিক। আর তাই তো হুগলী নদীর তীরে দাঁড়িয়ে ভগ্নপ্রায় কেল্লার দিকে তাকিয়ে করুণ সুরে বলতে ইচ্ছা করে – ডায়মন্ড হারবার তুমি কেমন আছো ?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *