Bangla24X7 Desk : বাবা-মাকে হারিয়েছিলেন আগেই। বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছিল স্ত্রীর সঙ্গেও। সে অর্থে ছিল না কোনও আত্মীয়স্বজন। তবে ছিল একজন। একজন বন্ধু। প্রতিবেশী হিন্দু যুবকের সৎকার করলেন মুসলিম যুবক। ঘটনাস্থল দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার।

ডায়মন্ড হারবার পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা তিলক রায়ের। বাড়িতে একাই থাকতেন। এদিকে বাবা-মায়ের মৃত্যুশোক প্রায় উন্মাদ করে তোলে তিলককে। একসময় পুরোপুরিভাবে মানসিক ভারসাম্য হারান তিনি। নিজের বাড়িতে একাই থাকতেন। কিছুদিন আগে এক কঠিন অসুখের শিকার হয়ে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন ওই যুবক। রবিবার রাতে সেকথা জানতে পেরে তিলকের বাড়িতে সমীর, মিন্টু, সুমন, রবি, সৃজনদের নিয়ে হাজির হন এলাকার যুবক রেজাউল করিম মল্লিক। তিলকের পরিস্থিতি দেখে রীতিমত বিস্মিত হন তাঁরা। সঙ্গে সঙ্গে পরিষ্কার জামা কাপড় পরিয়ে বাড়ি থেকে তুলে এনে রোগাক্রান্ত যুবককে তাঁরা ভরতি করেন ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। প্রাণে বাঁচেননি ওই যুবক।

মৃত যুবকের কোনও আত্মীয়স্বজন না থাকায় কে করবেন শেষকৃত্য তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে যান সকলেই। শেষমেষ সমস্যার সমাধান করলেন রেজাউল স্বয়ং। ডায়মন্ড হারবার শ্মশানে যাবতীয় হিন্দু শাস্ত্রীয় রীতিনীতি মেনেই রেজাউল সম্পন্ন করলেন মৃত যুবকের শেষকৃত্য। এমনকী পরম আত্মীয়ের মত ধারণ করেন কাছা। রেজাউল বলেন, “সবার আগে আমি একজন মানুষ। প্রতিবেশী তিলকের দাহকাজ করার মত তাঁর কোনও আত্মীয়-স্বজন নেই। তাই ছেলেদের নিয়ে সেই কাজ সম্পন্ন করেছি। বিষয়টি অস্বাভাবিক কিছু নয়।”

এদিকে বিষয়টি জানাজানি হতেই জাতিধর্ম নির্বিশেষে সকলেই ধন্য ধন্য করেছেন। ধর্মের ঊর্ধ্বে উঠে এভাবেই মানবতা বেঁচে থাক মানুষের হৃদয়ে, বলছেন ডায়মন্ড হারবারবাসী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *