Bangla24x7 Desk : ৫৪ বছরের কলেজ। জমি ছিল ১৮ বিঘা। হঠাৎ ১৫ বিঘা জমি ‘গায়েব’! মাত্র তিন বিঘা জমির উপর কলেজ চলছে। খাতা কলম বলছে সেটাই। এতেই কি ইউজিসি (বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন) এর অনুমোদন হারাতে চলেছে উত্তর মালদহের চাঁচোল কলেজ। রাজ্যের ভূমি রাজস্ব দপ্তরের এই গ্যাঁড়াকল চাঁচোল রাজবাড়ির ইতিহাসের অভিনব সংযোজন! গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শান্তি ছেত্রী বলেন, “চাঁচোল কলেজের জমি নিয়ে একটা সমস্যা তৈরি হয়েছে। সেটা আমি শুনেছি। ৫৪ বছরের কলেজ। জমি সঙ্কটে অনুমোদন হারাবে কেন ? আমরা বিষয়টি দেখছি। তবে ইউজিসির কোনও চিঠি পাইনি।”

জানা গিয়েছে, অনুমোদন হারানোর আশঙ্কায় জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি তড়িঘড়ি শিক্ষামন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। ইউজিসির গাইডলাইন অনুযায়ী কলেজের জন্য পাঁচ একর জমি থাকা বাধ্যতামূলক। তা না হলে সেই কলেজের অনুমোদন বাতিল হয়ে যাবে। এই অবস্থায় সমস্যা না মিটলে যে কোনও সময় তাঁদের অনুমোদন বাতিল হতে পারে বলে আশঙ্কায় ভুগছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কলেজের জমি গায়েব হল কী করে ? কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজবাড়ির একাংশে ১৯৬৯ সালে কলেজ গড়ে ওঠে। ১৯৭৬ সালে চাঁচোল রাজের তরফে রাজবাড়ির একাংশ দান করা হয়। যার পরিমাণ ৬.৮৬ একর। পরে রাজার অনেক জমির মতোই কলেজের ওই জমির ৬.০৯ একর খাস হয়ে যায়।

কিন্তু দিন কয়েক আগে কলেজের পিছনের পাঁচিল ভাঙা হচ্ছে দেখে টনক নড়ে কলেজ কতৃপক্ষের। তখনই খোঁজ নিয়ে তারা জানতে পারেন যে কলেজের ৬.০৯ একরের মধ্যে ৫.১৮ একর জমি আইন বিভাগের নামে হস্তান্তর হয়ে গিয়েছে। রাজবাড়ির অন্যদিকে রয়েছে চাঁচোল মহকুমা আদালত। ২০১২ সালে রাজবাড়ির ওই অংশ কেনার পর সেখানেই আদালত চালু হয়। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অজিত বিশ্বাস বলেন, ‘‘গত বছর দায়িত্ব নেওয়ার পর বিদায়ী ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এনিয়ে আমাকে কিছু জানাননি। দিন কয়েক আগে বিষয়টি জানতে পেরে এর মধ্যে শিক্ষামন্ত্রী ছাড়াও বিভিন্ন দপ্তরে সুরাহার জন্য আবেদন জানিয়েছি।’’

গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শান্তি ছেত্রী বলেন, ‘‘চাঁচোল কলেজ অনেকদিনের পুরনো। একটা সমস্যা হয়েছে। সেটা যে ভাবেই হোক মেটাতে হবে।’’ মালদহের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি প্রসূন রায় বলেন, “মহকুমা আদালতকে জমি দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকার দিয়েছে। দেখা যাচ্ছে, চাঁচোল কলেজের অধিকাংশ জমি আদালতের মধ্যে ঢুকে গিয়েছে। ফলে কলেজের জমি সংকট তৈরি হয়েছে। আমরা কখনওই চাঁচোল কলেজের অনুমোদন বাতিল হতে দেব না। রাজ্যের আইনমন্ত্রীর সাহায্য চেয়েছি। বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে দেখার আবেদন জানানো হয়েছে আইন দপ্তরকেও।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *